• Breaking News

    ডার্বির আগে ইস্টবেঙ্গলের আত্মবিশ্বাস বাড়ালেন জবি । কাশীনাথ ভট্টাচার্য


    ইস্টবেঙ্গল - ৩    গোকুলম – ১
    (ব্র্যান্ডন ৪, জবি ১৪, চুলোভা ৮২)            (সাবাহ ৫৭)
    গোল করে এবং করিয়ে নায়ক জবি।
    ছবি - এআইএফএফ 
    বিশ্বকাপার বেঞ্চে! মাঝমাঠে আগের ম্যাচের প্রথম এগারয় থাকা দুজন নেই। পরিবর্তিত গোলরক্ষকও। চারটি পরিবর্তনই কি ইস্টবেঙ্গলকে পাল্টে দিল?
    মাঝমাঠে কাসিম আইদারার উপস্থিতি এবং লালরিনডিকা রালতে প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে দিয়েছিলেন স্বস্তি। গোকুলম কেরালা এফসি-ও প্রথম ৪৫ মিনিট বোধহয় দেখে নিতে চেয়েছিল, কী করতে পারে টানা তিন ম্যাচে হারা দল। শুরুতেই আক্রমণে যাওয়ার সেই তাগিদই এনে দিয়েছিল দুটি গোল, ১৪ মিনিটের মধ্যে। ঝলমল করছিল লালহলুদ জার্সি তখন যুবভারতী স্টেডিয়ামে। ষষ্ঠ ম্যাচে তৃতীয় জয় পেয়ে ডার্বির আগে খানিকটা হলেও আত্মবিশ্বাস ফিরল ইস্টবেঙ্গলে।
    প্রথম গোলের সময় চুলোভা সেন্টার করেছিলেন বক্সে। এনরিকে ছেড়ে দিয়েছিলেন জবি জাস্টিনের জন্য। বুকে নিলেন যখন, মুখ নিজেদের গোলের দিকে। অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আগুয়ান ব্র্যান্ডনের জন্য সাজিয়ে দিয়েছিলেন জবি। ডানপায়ের শটে শিবিনরাজকে পরাস্ত করেন ব্র্যান্ডন, ম্যাচের তখন সবে চতুর্থ মিনিট!
    শুরুতেই গোল পেয়ে উজ্জীবিত ফুটবল খেলছিল ইস্টবেঙ্গল, সচরাচর যা করে না। খোলসে না ঢুকে ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টায় ১৪ মিনিটে দ্বিতীয় গোল। এবার জবির নিজের। ডিডিকার থ্রু ধরে সহজেই পরাস্ত করেছিলেন শিবিনরাজকে। এবারের আই লিগে জবির চতুর্থ গোল, উঠে এলেন সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে পেদ্রো, নেস্তর এবং চিদির সঙ্গে। গোকুলম তখন অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে এসে খোলসে ঢুকে-থাকা দল। তাদের কোচ বিনু জর্জ আগের দিনই বলেছিলেন, কলকাতার দলগুলো সত্যিই বড় এবং খেতাবের দাবিদার। তাঁর কথা সত্যি বলেই মেনে নিয়েছিলেন হয়ত গোকুলম কেরালা এফসির ফুটবলাররা!
    দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে মন দিল গোকুলম। মেহিকোর এনরিকে এসকেদাকে (সরকারি টিম লিস্টে তাঁকে দেখানো হচ্ছে স্পেনের, জানা গেল, তিনি স্পেনীয় হিসাবেই নিজেকে পরিচয় দিতে আগ্রহী) তুলে বিদ্যাসাগর সিংকে নামিয়েছিলেন স্পেনীয় কোচ আলেখান্দ্রো গার্সিয়া। সেই বিদ্যাসাগর সুযোগ পেয়েছিলেন ৩-০ করার, কিন্তু পায়ে-বলে ঠিকঠাক হয়নি। তারপর থেকে মাঠে শুধুই গোকুলম। ঘনঘন আক্রমণ, ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ আবারও ভঙ্গুর, যেমন দেখিয়েছিল শেষ তিন ম্যাচ হারের সময়।
    গোকুলমের গোলের দায় এড়াতে পারবেন না ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক রক্ষিত দাগার। পেছন থেকে উঁচু করে বল বাড়িয়েছিলেন দানিয়েল আদো। এগিয়ে এসেছিলেন দাগারও, কিন্তু ক্রিস্তিয়ান সাবাহ পায়ে লাগাতে গিয়েও লাগালেন না, বেরিয়ে যেতে দিলেন বল, যা বুঝতে দেরি করে ফেললেন লালহলুদ গোলরক্ষক। বল তাঁকে পেরিয়ে গেল, পেছন থেকে ঘুরে এসে সাবাহ ফাঁকা গোলে ঠেলে দিয়েছিলেন।
    সেই চাপ ধরে রাখতে আক্রমণের রাস্তা ছাড়েনি গোকুলম। ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ যে সত্যিই চাপে পড়ে গিয়েছিল বোঝা গেল যখন লালরিনডিকা রালতে মাথা দিয়ে ঢুঁসো মারলেন গোকুলমের ব্রাজিলীয় ফেলিপে দে কাস্ত্রোকে। অস্বীকার করার জায়গা নেই যে কাস্ত্রোই ফাউল করেছিলেন প্রথমে। কিন্তু উঠে দাঁড়িয়ে ঢুঁসো মারার চেষ্টা এবং তা-ও রেফারি প্রিয়ব্রত সিংয়ের চোখের সামনে, তারপরও লাল কার্ড না দেখানোর জন্য রেফারিকে ধন্যবাদ দিতেই পারেন ডিডিকা!
    সেই ডিডিকাই আবার ৮২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের তৃতীয় গোল সাজিয়ে দেওয়ার নায়ক। গোকুলম রক্ষণে তখন মাত্র দুজন। ডিডিকা বল নিয়ে এগোচ্ছিলেন যখন দুপাশে দুজন, কাছাকাছি উঠে আসেন চুলোভাও। বক্সের ঠিক বাইরে পৌঁছে ডিডিকা সাজিয়ে দেন চুলোভাকে। ডানপায়ের শটে তৃতীয় গোল এবং তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেন চুলোভা। ব্যবধান কমানোর পর মরিয়া হয়ে দ্বিতীয় গোল পেতে চেয়ে গোকুলমের রক্ষণে বারবারই তখন দুজন হয়ে যাচ্ছিলেন। ম্যাচের সেরা জবি জাস্টিন আগেই একবার সুযোগ পেয়েও গোল পাননি, আর একবার বিদ্যাসাগরকে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যে-সুযোগ থেকেও গোল হয়নি।
    জিতে ৬ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে এবং গোলপার্থক্যে এগিয়ে গিয়ে অষ্টম থেকে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল। গোকুলম সাতে নেমে মোহনবাগানকে নামিয়ে দিল অষ্টম স্থানে। আগামী রবিবার কলকাতা ডার্বির আগে তাই াই লিগ তালিকায় পয়েন্ট সমান হলেও ইস্টবেঙ্গল ষষ্ঠ, মোহনবাগান অষ্টম!

    No comments